দৈনিক একুশের বাণী | THE DAILY EKUSHER BANI

ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি: সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিপর্যস্ত

ফেনী জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। উজানের পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে জেলার সবকটি উপজেলা। বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি—সবকিছুই পানির নিচে। বন্যার কারণে সড়ক ও রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, এবং জেলা জুড়ে স্থবিরতা বিরাজ করছে।

NATIONAL NEWS

8/23/20241 min read

ফেনী, ২৩ আগস্ট ২০২৪ (দৈনিক একুশের বাণী): ফেনী জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। উজানের পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে জেলার সবকটি উপজেলা। বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমিসবকিছুই পানির নিচে। বন্যার কারণে সড়ক ও রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, এবং জেলা জুড়ে স্থবিরতা বিরাজ করছে।

ফেনীসহ কুমিল্লা, নোয়াখালী, এবং চট্টগ্রামের মতো ১১টি জেলায় এই স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা আঘাত হেনেছে। পূর্ব প্রস্তুতির অভাব ও আকস্মিক দুর্যোগের কারণে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ফেনীর ছয়টি উপজেলার প্রতিটি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পরশুরাম, ফুলগাজী, এবং ছাগলনাইয়া উপজেলাগুলো পুরোপুরি পানির নিচে ডুবে গেছে, আর অন্যান্য উপজেলাগুলোরও বেশিরভাগ বাড়িঘর পানিতে নিমজ্জিত।

পানির তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, এবং ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থা উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছে, তবে বৈরী আবহাওয়া এবং স্রোতের কারণে কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং ব্যক্তিরাও উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়েছেন, কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশে তাদেরও প্রচণ্ড সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

জেলার মুহুরী, কহুয়া, এবং সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে পানি দ্রুত প্রবেশ করছে, যা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলেছে। জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, এবং অধিকাংশ এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ এখন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করলেও সেখানে স্থান সংকুলান হচ্ছে না।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী, কুমিল্লা, এবং চট্টগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে পারে, তবে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২৯ লাখ মানুষ। ফেনী, নোয়াখালী, এবং কুমিল্লাসহ কয়েকটি জেলায় ১,৫৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে বন্যা দুর্গতদের আশ্রয় দেয়া হচ্ছে।

ফেনীসহ অন্যান্য জেলায় সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবীরা দুর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন। নগদ অর্থ, চাল, এবং শুকনা খাবারের সাহায্য প্রেরণ করা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।