রাখাইনে আরাকান আর্মির আধিপত্য: বাংলাদেশের জন্য নতুন কৌশলগত বাস্তবতা
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ ভূখণ্ডে আরাকান আর্মি (এএ)-এর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা বাংলাদেশের কৌশলগত স্বার্থে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
NATIONAL NEWSINTERNATIONAL NEWS
12/29/20241 min read


ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ (নিজস্ব প্রতিবেদন): মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ ভূখণ্ডে আরাকান আর্মি (এএ)-এর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা বাংলাদেশের কৌশলগত স্বার্থে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিআইপিএসএস)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এই মতামত উঠে আসে। "রাখাইন পরিস্থিতি ও এর বাংলাদেশ ও আঞ্চলিক প্রভাব" শীর্ষক আলোচনায় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, সাবেক কূটনীতিক এবং শিক্ষাবিদরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইপিএসএস-এর সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মুনিরুজ্জামান। প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক ডিফেন্স অ্যাটাচে মেজর জেনারেল (অব.) মো. শহীদুল হক এবং ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসি।
আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা:
পারভেজ করিম আব্বাসি তার বক্তব্যে বলেন, "বাংলাদেশের এখনই আরাকান আর্মির সঙ্গে কৌশলগত ও কূটনৈতিক যোগাযোগের সময়। এটি মানসম্পন্ন একটি পদ্ধতি হতে পারে। তবে সামরিক বিকল্পগুলোও খোলা রাখা উচিত।" তিনি আনুষ্ঠানিক চ্যানেল ছাড়াও অনানুষ্ঠানিক পন্থায় যোগাযোগের সম্ভাবনাগুলো পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন।
মেজর জেনারেল (অব.) মুনিরুজ্জামান বলেন, "রাখাইনের বর্তমান বাস্তবতায় বাংলাদেশের উচিত একটি সুস্পষ্ট কৌশল নির্ধারণ করা। সমুদ্রপথের মাধ্যমে বহিরাগত যোগাযোগ স্থাপনের সম্ভাবনা বিবেচনায় রেখে, ঢাকাকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।"
কৌশলগত সুযোগ ও ঝুঁকি:
সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) মো. শহীদুল হক রাখাইনে আরাকান আর্মির আধিপত্যকে ভারতের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ এবং বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত সুযোগ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, "এই পরিস্থিতি আমাদের স্বার্থে আলোচনার জন্য একটি সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি করেছে।"
এদিকে, থাইল্যান্ডে সম্প্রতি এক বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন মিয়ানমারের প্রতি সীমান্ত সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তিনি আরাকান আর্মির মতো বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের সম্ভাবনাকে নাকচ করেছেন।
প্রভাব ও ভবিষ্যৎ শঙ্কা:
রাখাইনে আরাকান আর্মির ক্রমবর্ধমান প্রভাব বাংলাদেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি করছে। একইসঙ্গে, নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রবেশের আশঙ্কাও বাড়ছে।
এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি সুপরিকল্পিত কৌশল গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।