দৈনিক একুশের বাণী | THE DAILY EKUSHER BANI

বাংলাদেশের ন্যায়সংগত অবস্থানের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি: প্রতিফলনের অপেক্ষায়

সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে টানাপোড়েন এবং আস্থার সংকট কাটানোর লক্ষ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রের মধ্যে এ বৈঠকটি প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনর্গঠনের জন্য এ আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

NATIONAL NEWS

12/12/20241 min read

ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ (দৈনিক একুশের বাণী): সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে টানাপোড়েন এবং আস্থার সংকট কাটানোর লক্ষ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রের মধ্যে এ বৈঠকটি প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনর্গঠনের জন্য এ আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

উন্মুক্ত আলোচনা এবং আস্থার সংকট মোকাবিলা
বৈঠকের সময় দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক উদ্বেগের বিষয়গুলো সরাসরি উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার এবং আগরতলার বাংলাদেশ মিশনে হামলার বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে তোলা হয়। ভারতের পক্ষ থেকেও ত্রিপুরায় বাংলাদেশবিরোধী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য প্রাসঙ্গিক আলোচনা করা হয়।

জসীম উদ্দিন বৈঠকে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে প্রশ্ন এবং ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। বিশেষ করে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রচার এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে বাংলাদেশ তার আপত্তি জানিয়েছে।

পরিবর্তিত বাস্তবতায় সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয়
বৈঠকে ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্র জানান, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ভারতের সব সরকারই বাংলাদেশের সব সরকারের সঙ্গে কাজ করেছে এবং ভবিষ্যতেও দুই দেশের জনগণের কল্যাণে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন তিনি।

বাংলাদেশ পক্ষ থেকে এ সময় জানানো হয় যে, গত ১৫ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়েছে, কিন্তু এ সম্পর্কের অনেক সিদ্ধান্ত মানুষের মতামত উপেক্ষা করে গৃহীত হয়েছে। এ কারণে জনগণের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক তৎপরতা নিয়ে আলোচনা
বৈঠকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান এবং তার রাজনৈতিক তৎপরতা নিয়ে বাংলাদেশের অস্বস্তি সরাসরি প্রকাশ করা হয়। জসীম উদ্দিন জানান, বাংলাদেশের জনগণ এ ধরনের কর্মকাণ্ড ভালোভাবে গ্রহণ করছে না। ভারতীয় পক্ষ এ সময় আশ্বস্ত করে যে, শেখ হাসিনা দুই দেশের সম্পর্কের কোনো বাধা সৃষ্টি করবেন না।

সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রতীক
বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, বিক্রম মিশ্রের এ সফরকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, "এই সফরকে আমরা আস্থার সংকট কাটানোর একটি ইতিবাচক সূচনা হিসেবে দেখছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।"

অপপ্রচার রোধ এবং গঠনমূলক সহযোগিতার প্রত্যাশা
বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের পক্ষ থেকে পারস্পরিক গঠনমূলক আলোচনা অব্যাহত রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে তারা সবসময়ই অগ্রাধিকার দেবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ আশা করছে, ভারত তার অঙ্গীকারের বাস্তব প্রতিফলন ঘটাবে এবং দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতা বজায় থাকবে।

আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ইতিবাচক পথে এগিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।