চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যাকাণ্ড: তিন মামলা, সাতজন অভিযুক্ত শনাক্ত
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় ৭৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় ১,৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় সাতজনকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
NATIONAL NEWS
11/28/20241 min read


ঢাকা, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ (দৈনিক একুশের বাণী): চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় ৭৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় ১,৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় সাতজনকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত। তাদের নাম রুমিত দাশ, সুমিত দাশ, গগন দাশ, নয়ন দাশ, বিশাল দাশ, আমান দাশ এবং মনু মেথর। হত্যার সময়কার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এদের শনাক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিহত আইনজীবীর পরিবারের পক্ষ থেকে রাতের মধ্যেই হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনার বিবরণ
মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের সামনের বান্ডিল সেবক কলোনি এলাকায় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে একদল লোক নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১৫-২০ জনের একটি দল তাকে আক্রমণ করে, যেখানে দুই যুবক হেলমেট পরে কোপাতে দেখা যায়। সাইফুলের নিথর দেহ মাটিতে পড়ে থাকলেও হামলাকারীরা তাকে পেটানো অব্যাহত রাখে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় সাইফুলসহ কয়েকজন আইনজীবী হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় হামলাকারীরা তাদের ধাওয়া দেয়। হোঁচট খেয়ে পড়ে যান সাইফুল। অন্যরা পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান।
প্রেক্ষাপট
চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর তাকে কারাগারে নেওয়ার সময় এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩৭ জন আহত হন।
গ্রেপ্তার অভিযুক্তদের পরিবার
গ্রেপ্তার হওয়া একজন আসামি সুমিত দাশের মা মুক্তা দাশ দাবি করেছেন, তার ছেলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সেবক হিসেবে কাজ করেন এবং এ ঘটনায় জড়িত নন। গ্রেপ্তারকৃতদের স্বজনরা কোতোয়ালি থানা ও আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় জমিয়েছেন।
এই হত্যাকাণ্ড এবং এর প্রেক্ষাপট চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলার চিত্রকে নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তদন্ত ও অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।