দৈনিক একুশের বাণী | THE DAILY EKUSHER BANI

ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ২৪ নিহত, ট্রাম্প শান্তি পরিকল্পনা ঘিরে মিসরে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন করে চালানো হামলায় অন্তত ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে গঠিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মিসরের শারম আল-শেখে সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ইসরায়েল ও হামাসের পরোক্ষ আলোচনা।

INTERNATIONAL NEWS

10/6/20251 min read

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | দৈনিক একুশের বাণী: গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন করে চালানো হামলায় অন্তত ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে গঠিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মিসরের শারম আল-শেখে সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ইসরায়েল ও হামাসের পরোক্ষ আলোচনা।

রবিবার হামাস জানায়, তাদের প্রতিনিধি দল উপনেতা খালিল আল-হায়্যার নেতৃত্বে শারম আল-শেখে পৌঁছেছে। দলটি আলোচনায় অংশ নেবে যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া, ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার এবং বন্দি বিনিময় ইস্যুতে। অপরদিকে, ইসরায়েলের প্রতিনিধি দল সোমবার সকালে মিসরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় বলে জানানো হয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে।

প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি আশাবাদ প্রকাশ করেছেন যে, অবশিষ্ট বন্দিদের মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি নিয়ে শিগগিরই একটি সমঝোতা চুক্তি হতে পারে। এদিকে ট্রাম্প বলেছেন, আলোচনার অগ্রগতি “খুবই ইতিবাচক” এবং তিনি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে দ্রুত সমাধানে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও গাজায় ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রবিবার দিনের শেষ দিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। এর মধ্যে রাফাহর উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে গুলি করে চারজন আশ্রয়প্রার্থীকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স।

গাজার আজ-জুয়াইদা এলাকা থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ জানান, হামলা চলছে এমন এলাকাগুলোতে যেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। “ফিলিস্তিনিরা ভেবেছিল অন্তত এক রাত শান্তিতে কাটাতে পারবে, কিন্তু সেটিও সম্ভব হয়নি,” তিনি বলেন।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে প্রায় ২,৭০০ পরিবার—অর্থাৎ ৮,৫০০ এর বেশি মানুষ—নাগরিক নিবন্ধন তালিকা থেকে মুছে গেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে এক হাজারেরও বেশি শিশু (বয়স এক বছরের নিচে), ১,৬৭০ জন চিকিৎসা কর্মী, ২৫৪ জন সাংবাদিক এবং ১৪০ জন উদ্ধারকর্মী।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, “যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি, তবে এটি সেই মুহূর্ত, যখন আমরা সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছেছি বন্দিদের মুক্তির সম্ভাবনার।” তিনি ইসরায়েলকে আহ্বান জানান আলোচনার সময় বোমা হামলা বন্ধ রাখতে, “কারণ যুদ্ধের মাঝখানে বন্দি মুক্তি সম্ভব নয়।”

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস তাদের হাতে থাকা বন্দিদের মুক্তি দেবে এবং ইসরায়েল গাজা থেকে সেনা সরিয়ে নেবে আগস্টের তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ পর্যন্ত। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, গাজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলি সেনারা কিছু এলাকায় অবস্থান বজায় রাখবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই আলোচনা যদি সফল হয়, তবে এটি চলমান গাজা সংঘাতের অবসানের পথে এক নতুন অধ্যায় সূচনা করতে পারে। তবে হামলা অব্যাহত থাকলে আলোচনার অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পর্যবেক্ষকরা।