দৈনিক একুশের বাণী | THE DAILY EKUSHER BANI

গাজা সংকটে নতুন সমীকরণ: আলোচনায় হামাস, নেতৃত্বে ট্রাম্প

দীর্ঘ প্রায় দুই বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গাজা উপত্যকায় শান্তির সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলতে পারে। শুক্রবার ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ঘোষণা দিয়েছে, তারা বন্দী বিনিময় ও যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে অবিলম্বে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।

INTERNATIONAL NEWS

10/4/20251 min read

দৈনিক একুশের বাণী | ঢাকা, ৪ অক্টোবর ২০২৫: দীর্ঘ প্রায় দুই বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গাজা উপত্যকায় শান্তির সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলতে পারে। শুক্রবার ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ঘোষণা দিয়েছে, তারা বন্দী বিনিময় ও যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে অবিলম্বে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।

এমন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রস্তাবনায় বন্দী মুক্তি, ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি, ধাপে ধাপে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং গাজার প্রশাসনকে একটি টেকনোক্র্যাটিক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ—গাজা শাসন থেকে হামাসকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।

হামাসের অবস্থান
হামাস মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান উৎসাহজনক। আমরা বন্দী বিনিময় ও যুদ্ধ অবসানের আলোচনায় দ্রুত বসতে প্রস্তুত।”
এই বক্তব্য গাজার জনগণের মাঝে স্বস্তির সঞ্চার করেছে। শরণার্থী শিবিরগুলোতে আনন্দধ্বনি শোনা গেছে—যা ইঙ্গিত করে দীর্ঘ যুদ্ধক্লান্ত মানুষ শান্তির জন্য কতটা অধীর হয়ে আছে।

ইসরাইলি প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, তারা ট্রাম্প পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে প্রস্তুত। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “আমরা প্রেসিডেন্ট ও তার দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবো, যাতে যুদ্ধ অবসানের পথে অগ্রসর হওয়া যায়।”

ট্রাম্পের ভূমিকায় কৌতূহল
ট্রাম্প নিজেই বলেছেন, এটি তার কাছে “একটি বিশেষ দিন”। এমনকি তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুদ্ধ-পরবর্তী অন্তর্বর্তী প্রশাসনের নেতৃত্বে তিনি সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারেন। এ ঘোষণায় অনেকের মনে প্রশ্ন উঠছে—ট্রাম্প কি নতুন ভূরাজনৈতিক কৌশল আঁকছেন? নাকি এটি তার ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অবস্থান সুসংহত করার প্রচেষ্টা?

সম্ভাবনা ও আশঙ্কা
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রতিটি আলোচনার প্রস্তাব যেমন নতুন আশার জন্ম দেয়, তেমনি সংশয়ের দেয়ালও গড়ে তোলে। গাজার জনগণ শান্তি চায়, কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—যদি হামাসকে প্রশাসন থেকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হয়, তবে এ অঞ্চলের বাস্তব রাজনীতিতে তা কতটা কার্যকর হবে? আবার ইসরাইলের নিরস্ত্রীকরণ দাবি বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব, সেটিও একটি বড় প্রশ্ন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় অর্জন হলো—উভয় পক্ষই আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এটাই হয়তো দীর্ঘ সংঘাত-পরবর্তী শান্তির প্রথম ধাপ। গাজার মানুষ যারা দীর্ঘদিন ধরে মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে বেঁচে আছেন, তাদের প্রত্যাশা একটাই—এই আলোচনাই যেন প্রকৃত শান্তির পথ খুলে দেয়।