সংবাদ প্রতিবেদন (৫ মার্চ ২০২৫): যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা স্থগিতের ফলে ইউক্রেন সংকট নতুন মোড় নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আপাতত কিয়েভে কোনো অস্ত্র বা সামরিক সরঞ্জাম পাঠানো হবে না। পাশাপাশি রাশিয়ার ওপর আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পরিকল্পনাও চলছে।
এর আগে হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এক উত্তপ্ত বৈঠকের পর থেকেই এমন আশঙ্কা করা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সেই শঙ্কাই সত্যি হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ও প্রতিক্রিয়া
গত তিন বছরে ইউক্রেন ৬৫.৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তা পেয়েছে, যা মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন অনুমোদন করেছিল। তবে ট্রাম্প প্রশাসন সেই চালান স্থগিত করেছে এবং যেসব অস্ত্র ইতোমধ্যে সরবরাহ প্রক্রিয়ায় ছিল, সেগুলো ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের নেতৃত্বে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন।
জেলেনস্কি এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের নেতৃত্বে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক বার্তায় বলেন, "ইউক্রেনে টেকসই শান্তির জন্য আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শক্তিশালী নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।"
রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ইঙ্গিত
ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের পরিকল্পনা করছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং নিষেধাজ্ঞা শিথিলের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
ইউরোপের প্রস্তুতি ও অনিশ্চয়তা
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের পর ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিরক্ষা খাতে ৮০০ বিলিয়ন পাউন্ডের পরিকল্পনা নিয়েছে, তবে বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ইউক্রেনের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে আকাশ প্রতিরক্ষা, দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও স্যাটেলাইট যোগাযোগে ইউরোপের সক্ষমতা তুলনামূলকভাবে দুর্বল।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে কৌশল পরিবর্তন করতে হতে পারে এবং পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে বিকল্প সহায়তা পেতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।