গাজা থেকে ফেরা ইসরায়েলি সেনাদের মানসিক সংকট: একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীতে আত্মহত্যার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। গাজায় যুদ্ধ থেকে ফিরে আসা অনেক সেনা মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত যে তাঁরা চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছেন। সম্প্রতি চার সন্তানের জনক, ইসরায়েলি সেনা এলিরান মিজরাহির আত্মহত্যার ঘটনাটি এই সংকটের মাত্রা আরও প্রকট করেছে।
INTERNATIONAL NEWS
10/22/20241 min read


ঢাকা, ২২ অক্টোবর ২০২৪ (দৈনিক একুশের বাণী): ইসরায়েলের সেনাবাহিনীতে আত্মহত্যার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। গাজায় যুদ্ধ থেকে ফিরে আসা অনেক সেনা মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত যে তাঁরা চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছেন। সম্প্রতি চার সন্তানের জনক, ইসরায়েলি সেনা এলিরান মিজরাহির আত্মহত্যার ঘটনাটি এই সংকটের মাত্রা আরও প্রকট করেছে।
এলিরান গত বছর গাজায় পাঠানো হয়েছিলেন, যেখানে তাঁকে লড়তে হয়েছিল ভয়াবহ যুদ্ধের মধ্যে। যুদ্ধ শেষে আহত অবস্থায় ফেরার পরেও মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। মায়ের ভাষায়, “গাজা ছেড়ে এলেও গাজা তাকে ছাড়েনি,” এই মানসিক চাপের কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেন। এলিরান ভুগছিলেন পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার (পিটিএসডি) নামে পরিচিত একটি মানসিক রোগে। গাজা থেকে ফেরার পর পিটিএসডি আক্রান্ত অনেক সেনা আত্মহত্যা করছেন, যদিও তাদের সঠিক সংখ্যা এখনও নির্ধারণ করা যায়নি।
গাজায় চলমান সংঘর্ষে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। ২০২৩ সালে হামাসের হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক আক্রমণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অঞ্চলটি। সেনারা ফিরে আসার পর নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনায় বলেন, “আমি যা দেখেছি, তা বাইরের কেউ বুঝতে পারবে না।” এই ধরনের মানসিক চাপে অনেক সেনাই নেতানিয়াহুর সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।
এক ইসরায়েলি চিকিৎসক জানান, গাজায় দায়িত্ব পালন করার সময় তাঁর মতো অনেক সেনার ওপর ভয়াবহ মানসিক প্রভাব পড়েছে, যা তাঁদের জীবনকেও বিপন্ন করে তুলেছে। সেনাদের একাংশের দাবি, তাঁরা যে ধরনের নিষ্ঠুরতা এবং ধ্বংসের মুখোমুখি হয়েছেন, তা সাধারণ মানুষ কখনও কল্পনাও করতে পারবে না।
এলিরানের আত্মহত্যার ঘটনা শুধুই একটি উদাহরণ। পিটিএসডিতে আক্রান্ত অন্যান্য সেনাদের কাছ থেকেও উঠে আসছে একই ধরনের করুণ অভিজ্ঞতা। গাজা থেকে ফিরে আসার পর মানসিক চিকিৎসা গ্রহণ করা সত্ত্বেও এলিরান নিজের যন্ত্রণাকে সামাল দিতে পারেননি। তার বোন শির বলেন, “সে সবসময় বলত, ‘আমি যা দেখেছি, তা কেউ বুঝবে না।’”
মিজরাহি পরিবার এখন কেবল শোকের মধ্যেই দিন কাটাচ্ছে না, তারা বোঝাতে চাইছে, গাজার যুদ্ধের আসল ক্ষতি শুধু সামরিক নয়, মানবিকতারও। এই যুদ্ধ শুধু ফিলিস্তিনের মানুষকে বিপন্ন করছে না, ইসরায়েলের সেনাদের মানসিক অবস্থাকেও বিপর্যস্ত করে তুলেছে।